বাংলা ভাষার সমস্ত লেখক - এক জায়গায় ক্রমানুসারে
শক্তি চট্টোপাধ্যায়
জন্ম - ২৫শে নভেম্বর, ১৯৩৩ মৃত্যু - ২২শে মার্চ, ১৯৯৫
দ. ২৪ পরগনা, প. বঙ্গ, ভারত শান্তিনিকেতন, বীরভূম, ভারত
শক্তি চট্টোপাধ্যায়
জন্ম - ২৫শে নভেম্বর, ১৯৩৩ মৃত্যু - ২২শে মার্চ, ১৯৯৫
দ. ২৪ পরগনা, প. বঙ্গ, ভারত শান্তিনিকেতন, বীরভূম, ভারত
এবং হ্রদে সোনালি অগণন
হাঁসের দল দোলায় পাখা তবু তোমার সঙ্গে থাকা
চমৎকার জুলেখা ডবসন
ঈশানকোনে অমনোযোগে মেঘের ঝুঁটি ধরেছে রোগে
দুমড়ে পড়ে প্রবলা শালবন
চাঁদ উঠেছে অন্তরীক্ষে মনোস্থাপন করি ভিক্ষে
তোমার জন্যে জুলেখা ডবসন ।"
রবীন্দ্রনাথ, নজরুল ও জীবনানন্দের পরবর্তী সময়ে বাংলা সাহিত্যজগতে অন্যতম জনপ্রিয় ও আধুনিক কবি হলেন শক্তি চট্টোপাধ্যায় । শক্তি চট্টোপাধ্যায় ছিলেন কবি, ঔপন্যাসিক, অনুবাদক ও সম্পাদক । জীবিত অবস্থায় অসামান্য প্রতিভা, খ্যাতি ও গল্পকথা নিয়ে প্রবাদে পরিনত হয়েছিলেন এই জনপ্রিয় কবি ।
1961 সালে নভেম্বর মাসে পাটনা শহর থেকে ইশতেহার প্রকাশের মাধ্যমে বাংলা সাহিত্যে স্থিতাবস্থা ভাঙ্গার জন্য যে আন্দোলন হয় যা হাংরি আন্দোলন নামে সুপরিচিত, সেই আন্দোলনের অন্যতম কান্ডারি ছিলেন এই জনপ্রিয় কবি । উপরোক্ত লাইনগুলি এই জনপ্রিয় কবির রচিত "ধর্মে আছো জিরাফে আছো" নামক কাব্যগ্রন্থের অন্তর্গত "জুলেখা ডবসন" কবিতা থেকে উদ্ধৃত করা হয়েছে । এই প্রবাদপ্রতিম কবি 1933 সালে নভেম্বর মাসের 25 তারিখে বর্তমান ভারতবর্ষের পশ্চিমবঙ্গ প্রদেশের অন্তর্গত দক্ষিন চব্বিশ পরগনা জেলার বহড়ু গ্রামে এক দরিদ্র ব্রাহ্মণ পরিবারে ভুমিষ্ঠ হন । এই প্রবাদপ্রতিম কবির পিতার নাম বামানাথ চট্টোপাধ্যায় এবং মাতার নাম কমলা দেবী । মাত্র চার বছর বয়সে পিতৃহারা হয়ে এই প্রবাদপ্রতিম কবি মাতুলালয়ে বড়ো হন । এই আধুনিক কবি সপরিবারে 1948 সালে কলকাতার বাগবাজারে আসেন এবং এখানকার একটি স্থানীয় স্কুলে অষ্টম শ্রেনীতে ভর্তি হন। এই স্কুল থেকেই 1951 সালে মাধ্যমিক এবং এই শহরেই মধ্যস্থিত সিটি কলেজ থেকে বানিজ্য বিভাগে 1953 সালে উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষায় পাশ করে বাংলা সাহিত্যে অনার্স নিয়ে প্রেসিডেন্সী কলেজে ভর্তি হন এই আধুনিক কবি । এই আধুনিক কবি দারিদ্রতার কারনে এই পাঠক্রম অর্ধসমাপ্ত রেখে প্রেসিডেন্সী কলেজ ত্যাগ করেন । কবি বুদ্ধদেব বসুর আমন্ত্রনে যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ে সদ্যগঠিত তুলনামূলক সাহিত্য কোর্সে ভর্তি হয়েও কয়েকমাস পরে তা ছেড়ে দেন এই খ্যাতনামা কবি । এই খ্যাতনামা কবির প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষা এখানেই শেষ । এই খ্যাতনামা কবি 1951 সাল থেকে 1955 সাল পর্যন্ত কলেজে কমিউনিস্ট আন্দোলনের সঙ্গে যুক্ত থাকেন । অবশেষে 1958 সালে কমিউনিস্ট দল ত্যাগ করেন এই খ্যাতনামা কবি । তৎকালীন "ক্ল্যারিয়ন" বিজ্ঞাপন কোম্পানীতে কপিরাইটারের চাকরির মাধ্যমে এই বরণীয় কবির কর্মজীবন আরম্ভ হয় । বন্ধু পৃথ্বীশ গঙ্গোপাধ্যায় সাহায্যে ভবানীপুরে একটি টিউটোরিয়াল হোম খুলে সেখানে কিছুদিন শিক্ষকতাও করেন এই বরণীয় কবি । এই বরণীয় কবি পঞ্চাশের দশকের জনপ্রিয় মুখপত্র "কৃত্তিবাস" পত্রিকাগোষ্ঠীতে 1963 সালে যোগদান করেন । পরবর্তীকালে এই পত্রিকাগোষ্ঠীর আরেক কবি সুনীল গঙ্গোপাধ্যায়ের সাথে এই বরণীয় কবির নাম সাহিত্যিকমহলে একত্রে উচ্চারিত হতো । এই স্বনামধন্য কবি 1970 সাল থেকে 1994 সাল পর্যন্ত "আনন্দবাজার পত্রিকার" সাথে যুক্ত ছিলেন । "আনন্দবাজার পত্রিকা" থেকে অবসর গ্রহন করার পর "বিনোদন" পত্রের সাথে যুক্ত হন এই স্বনামধন্য কবি । এই স্বনামধন্য কবি গদ্য রচনার মধ্য দিয়ে সাহিত্যজীবন আরম্ভ করেন । ছোট এক পত্রে এই কবির "নিরুপমের দুঃখ" গল্পটি মুদ্রিত হয় । এই স্বনামধন্য কবির রচিত প্রথম উপন্যাস ছিল কুয়োতলা যা 1961 সালে প্রকাশিত হয় । এই উপন্যাসে কবি নিজ গ্রামের ভাষা ব্যবহার করেছিলেন । এই স্বনামধন্য কবি পরবর্তীকালে কাব্য রচনার মধ্য দিয়ে পাঠকসমাজে পরিচিতি লাভ করেন । এই স্বনামধন্য কবির রচিত কাব্যগ্রন্থগুলির মধ্যে বিশেষভাবে উল্লেখযোগ্য হল - হে প্রেম হে নৈঃশব্দ ( 1961), ধর্মেও আছো জিরাফেও আছো (1965), সোনার মাছি খুন করেছি (1967) , হেমন্তের অরন্যে আমি পোস্টম্যান (1968), পাড়ের কাঁথা মাটির বাড়ি (1971), চতুর্দশপদী কবিতাবলী (1972), প্রভু নষ্ট হয়ে যাই (1972), সুখে আছি (1972), ঈশ্বর থাকেন জলে (1975), জ্বলন্ত রুমাল (1975), যেতে পারি কিন্তু কেন যাবো (1982) প্রভৃতি । এই স্বনামধন্য কবি তার কবিতাতে সমুদ্র, পাহাড়, বৃষ্টি, নদী, আকাশ, রাত, জোৎস্না, সন্ধ্যা, দিন, জীবন-মৃত্যু, জীবনের স্বপ্ন, আশা ও ভালবাসার সুস্পষ্ট চিত্র অঙ্কন করেছেন । এই প্রথিতযশা কবি "মেঘদূত", "ওমর খৈয়াম" ও "গালিবের" কবিতার বাংলায় অনুবাদ করেছেন এবং সম্পাদনা করেছেন "কবিতা সাপ্তাহিকী" । এই প্রথিতযশা তার সাহিত্যকীর্তির জন্য 1975 সালে সুরেশচন্দ্র স্মৃতি পুরস্কার, 1983 সালে সাহিত্য অকাদেমীসহ একাধিক পুরস্কারে ভূষিত হন ।
জীবনের শেষ প্রান্তে এই প্রথিতযশা কবি বিশ্বভারতীর অতিথি - অধ্যাপক পদে বহাল ছিলেন। 1995 সালে মার্চ মাসের 23 তারিখে বর্তমান ভারতবর্ষের পশ্চিমবঙ্গ প্রদেশের অন্তর্গত বীরভূম জেলার শান্তিনিকেতনে এই প্রথিতযশা কবির আকস্মিক প্রয়ান হয় ।
কৃতজ্ঞতা - Shining Subir.
নীচে তার রচনার ওপর ক্লিক করলে নির্দিষ্ট বইটি পেতে পারেন।
অ - ঔ | ক - ন | প - ম, শ | স, ষ, র, ল, য, হ, ক্ষ |
---|---|---|---|
একটি আবেদন -
কেউ যদি কোনো বই/ পত্রিকা স্ক্যান করতে / দিতে চান
বা সূচীপত্র ও.সি.আর. করতে চান -
তাহলে নিচের ইমেলে যোগাযোগ করবেন
কেউ যদি কোনো বই/ পত্রিকা স্ক্যান করতে / দিতে চান
বা সূচীপত্র ও.সি.আর. করতে চান -
তাহলে নিচের ইমেলে যোগাযোগ করবেন
babuipakhi819@gmail.com
No comments:
Post a Comment